বৃষ্টির গান - বদর শাকির আল - শায়াব



তুমি কি জানো কোন সে দুঃখ বৃষ্টিকে প্রাণীত করে?

জানো কি খানাখন্দ বুঁজে এলে সে কি করে কাঁদে?

পথভোলা একলা এক মানুষ বৃষ্টির ছাঁটে কী খুঁজে পায়?

অবিরাম, যেনো রক্তের ছিটে যেমন, ক্ষুধার্ত মানুষ, ভালোবাসার মতো, যেমন শিশু, মৃত্যুর মতো, অনিঃশেষ বৃষ্টি।

তোমার চোখদুটো আমাকে নিয়ে চলে বৃষ্টি-বিহারে

উপসাগর উজিয়ে বিদ্যুৎরেখা কুড়িয়ে বেড়ায় ইরাকের ঢেউ যতো

সাথী হয় নক্ষত্ররাজি আর ঝিনুকের খোলেরা

যদি একটি ভোর তাদের থেকে বিশ্রাম ছিনিয়ে নেয় বা, ভারি রাত টেনে দেয় রক্তজমাট আঙরাখা।

আমি কেঁদে ফেলি
উপসাগরের তীরে: ‘হে উপসাগর
হে মুক্তা, খোল আর মৃত্যুর দেবতা!’

আর তখন প্রতিধ্বনি আসে,

ঠিক যেমনটা ভাবা হয়েছিল তেমনই

‘হে উপসাগর
হে মুক্তা, খোল আর মৃত্যুর দেবতা!’

প্রায় নির্ভূল শুনতে পাই শাঁসানো কণ্ঠের ইরাকি বজ্রধ্বনি

পাহাড়ে আর সমতলে জড়ো হয়ে উঠছে আলোর বান

কেননা আগুয়ানেরা আগল ভাঙল বলে! আর টুটলেই ছড়িয়ে পড়বে হাওয়া উপত্যকা জুড়ে।

নিশ্চিত শুনতে পাই খেজুর পাতারা আকণ্ঠ পান করছে বৃষ্টি-জল

শুনি তল্লাটে তল্লাটে দেশান্তরী মানুষের অস্ফূট গোঙানী

উপসাগরে যুঝে চলেছে বৈঠা আর পাল

ঝড় আর বজ্র হুঙ্কার, গাইছে,

বৃষ্টি...বৃষ্টি....

ঝরঝর বৃষ্টি!



বৃষ্টির গান (বদর শাকির আল - শায়াব)
বৈরুত, লেবানন

Post a Comment

1 Comments