কালাম এ - ইকবাল (জওয়ানানে ইসলাম)


খেতাব বা জওয়ানানে ইসলাম' কবিতাটি আল্লামা ইকবাল রহ. যুবকদের উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন। কবিতার প্রতিটি শ্লোক থেকে মুসলিম তারুণ্যের প্রতি দরদ উপচে পড়ছে, দিশেহারা তারুণ্যকে পথ দেখিয়ে বেড়াচ্ছে। ইকবাল যুবকদেরকে তাদের গৌরবমাখা অতীত স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। মহান সে পিতৃপুরুষের আত্মমর্যাদার স্মৃতি রোমন্থন করছেন।

কবিতার প্রতিটি লাইন সোনালী অতীতে আমাদের পৌঁছে দিবে, দিব্যি চোখে যেন আমরা পারস্যের মুকুট মাড়িয়ে বীরদর্পে এগিয়ে যাওয়া সে মহান পুরুষদের দেখতে পাব। প্রিয় পাঠক! সে শব্দগুলোর যথাযথ অনুবাদে আমি অক্ষম। তবুও কিছু গরীবি প্রচেষ্টা...



کبھی اے نوجواں مسلم! تدبّر بھی کِیا تُو نے
وہ کیا گردُوں تھا تُو جس کا ہے اک ٹُوٹا ہوا تارا
কখনো হে মুসলিম যুবক! ভেবে দেখেছ কি তুমি,
আসমানের ঝরে পড়া সে তারাগুলোর তুমিও একটি ছিলে।

تجھے اس قوم نے پالا ہے آغوشِ محبّت میں
کُچل ڈالا تھا جس نے پاؤں میں تاجِ سرِ دارا
ভালোবাসার আঁচলে তোমাকে বড় করেছিল এক জাতি,
যারা অবজ্ঞা ভরে পায়ে মাড়িয়েছিল পারস্যের মুকুটকে।

تمدّن آفریں، خلاّقِ آئینِ جہاں داری
وہ صحرائے عرب یعنی شتربانوں کا گہوارا
সভ্যতার বীজ বুনে পৃথিবীর আইন যারা করেছিল তৈরী,
যুবক! আমি তোমায় আরব মরুভূমির সে মেষচালকদের কথা বলছি।

سماں ’الفُقْرَ و فَخرْی‘ کا رہا شانِ امارت میں
“بآب و رنگ و خال و خط چہ حاجت رُوے زیبا را”
বাদশাহীতেও যাদের ছিল দারিদ্র‍্যের আলিশান ছাপ
সুদর্শন সে অবয়বে প্রসাধনীর আর কীইবা দরকার!?

گدائی میں بھی وہ اللہ والے تھے غیور اتنے
کہ مُنعم کو گدا کے ڈر سے بخشش کا نہ تھا یارا
অভাবেও ছিলেন তারা এমন মর্যাদাবোধ সম্পন্ন
অভাবীর প্রতাপে ধনীর ছিলনা দান-দক্ষিণার সাহস

غرض مَیں کیا کہُوں تجھ سے کہ وہ صحرا نشیں کیا تھے
جہاں‌گیر و جہاں‌دار و جہاں‌بان و جہاں‌آرا
যাক! কেমন ছিল সে মরুবাসীরা, কিভাবে যে তোমায় বলি
তারা ছিল বিশ্বজয়ী - প্রতাপশালী, এই পৃথিবীর রক্ষক ও মালিক

اگر چاہوں تو نقشہ کھینچ کر الفاظ میں رکھ دوں
مگر تیرے تخیّل سے فزوں تر ہے وہ نظّارا
সে দৃশ্যকে চাইলে শব্দের বুননে এঁকে দেখাতে পারি
কিন্তু তোমার কল্পনা যে তা ধারণ করতেও অক্ষম

تجھے آبا سے اپنے کوئی نسبت ہو نہیں سکتی
کہ تُو گُفتار وہ کردار، تُو ثابت وہ سیّارا
পুর্বপুরুষের সাথে তোমার সম্পর্ক হতেই তো পারেনা
তুমি বাচাল তারা তৎপর, তুমি অলস তারা কর্মঠ

گنوا دی ہم نے جو اسلاف سے میراث پائی تھی
ثُریّا سے زمیں پر آسماں نے ہم کو دے مارا
পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া আমানতকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি
যদ্দরুন আসমান থেকে পাতালপুরীতে এসে নিক্ষিপ্ত হয়েছি

حکومت کا تو کیا رونا کہ وہ اک عارضی شے تھی
نہیں دنیا کے آئینِ مسلَّم سے کوئی چارا
ক্ষমতার কথা ভেবে কেঁদে আর কী লাভ, অস্থায়ী এক বিষয়ই তো ছিল।
দুনিয়ার সুবিদিত নিয়ম থেকে কী আর পালিয়ে বাঁচা সম্ভব?!

مگر وہ عِلم کے موتی، کتابیں اپنے آبا کی
جو دیکھیں ان کو یورپ میں تو دل ہوتا ہے سیپارا
পিতৃপুরুষের রেখে যাওয়া অমূল্য সে কিতাবগুলো
যখন ইউরোপে দেখতে পাই, হৃদয় খানখান হয়ে যায়

“غنیؔ! روزِ سیاہِ پیرِ کنعاں را تماشا کُن
کہ نُورِ دیدہ اش روشن کُند چشمِ زلیخا را”
যুবক! আজকের এই কালো দিনে কেনানের সে বৃদ্ধের কথা ভাবো
যার কলিজার টুকরা ইউসুফ, জোলায়খার কলিজা শান্ত করেছিল।

কার্টেসি: আরশাদ আনসারী

Post a Comment

0 Comments