অনুতাপ

 


হে আমার রব!!
আমি অনুভব করছি
আমার অন্তর...
আমার অন্তরটি আসলে কলুষিত
অনেকটা দীর্ঘদিন পর বৃষ্টির পানিতে ধোয়া নোংরা শহরের নর্দমার মতো
আমার অন্তর বিক্ষিপ্ত
যেমনটা কামারের শক্তিশালী আঘাতে পুরনো জং ধরা ছুরির বাটের ধ্বংসের পর হতভাগার অসংখ্য খন্ডের মতো
আমার অন্তর গুনাহের কালিমায় কলংকময়
যেমনটা অপচয়প্রবণ ধ্বনী ব্যক্তির জালিয়ে রাখা সার্বক্ষণিক আগুনের জালানির মতো, যা কয়লার চেয়েও কালো
আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে
গলা পর্যন্ত ঠেকা দীর্ঘদিনের জমাট বাধা গুনাহের লোকমায়
নিজে নিজের কার্য জেনে বুঝেও অস্বীকার করা শুরু করেছি
অনিচ্ছাকৃত পাপের দায়ভার কেই বা নিতে চায়
কিন্তু আমারটা তো সব অনিচ্ছাকৃত নয়।
তবুও, আমি কি অস্বীকার করতে পারি আমার গুনাহের?
নিজের স্বত্তাটাও আজ গুনাহের দায়ভার নিতে নারাজ
সে চায় নিস্কৃতি আমার আত্না হতে
যা আমাকে আমার ফিতরাত সম্বন্ধে প্রশ্ন উঠিয়ে দিয়েছে
আমার মস্তিষ্ক তার প্রতিটা সেল থেকে প্রতিটা কোষে সঙ্কেত করছে আমার গুনাহের দায়ভার না নেওয়ার
শরীরের প্রতিটা অঙ্গ প্রত্যঙ্গের থেকে স্বাক্ষ্য আসছে আমার বিরুদ্ধে
আমি জানিনা
এতোদিন পরে আমার মন কেনো তোমাকে স্বরণ করছে
হে আমার আল্লাহ!!
অধম আমি আজ সেজদায় পড়ে উপলব্ধি করছি কেয়ামতের দিনের জবাবদিহিতার ভয়াবহতা
আমি দুনিয়ায় বসেই তোমার কথা স্বরণ করে হচ্ছি হয়রান
আমার ওষ্ঠাগত ঠোক গেলার জন্য আমি যুদ্ধ করছি
আজ আমার কোনো নির্দেশ প্রয়োগ করতে পারছিনা নিজের শরীরে
তারা আমাকে কষ্ট দিয়ে আসলে চায় কি?
তারা কি চায়? তারা কি চায়? তারা কি চায়?
জবাব পাচ্ছিনা
চিন্তাগুলো জট পাকিয়ে গিয়েছে শতবর্ষী বৃদ্ধার চুলের মতো
হে আমার রব! আমাকে জানিয়ে দিন তারা আসলে কি চায়....
ইয়া রাব্বী!!!!!!
বিষ্ময়ে মাখামাখি আমি আমার দীর্ঘদিনের অব্যবহৃত জায়নামাজ থেকে মাথা উঠিয়ে সর্বোচ্চ আওয়াজে বললাম,
"আমি আন্দাজ করতে পারছি ওরা কি চায়?"
ছোট অবোধ শিশুর মতো
যে কিনা আবিষ্কার করে তার ছোট লাল গাড়িটি চলে
চারটি ছোট চাকার সাহায্যে
তার মতো আমিও নতুন কিছু আবিষ্কারের আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে চিৎকার করে বললাম,
"আমি বুঝে গেছি... আমি বুঝে গেছি..."
বিড়বিড় করে নিজেকে নিজে ভাগ্যবান বলছি
নিজের পিঠ নিজে চাপড়ানোর সুযোগ থাকলে আজ আমি সেটাই করে বসতাম
কারন, "আমি হচ্ছি সেই সব ভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত যাদেরকে আল্লাহ ভালবেসে-করুণা করে চান হেদায়াত দিতে, যেভাবেই হোক তাদেরকে আল্লাহ চাননা জাহান্নামে ঠেলে দিতে।"

কবিতা
অনুতাপ
আব্দুল্লাহ আল রাইহান
০৭/১০/২০২০

Post a Comment

0 Comments